মতিহার থানার এসআই শাহাবুলের জাদুতে ওসি সিদ্দিকুর রহমানও বশ হয়ে গেলেন
প্রকাশিত : ০১:৫৪ পূর্বাহ্ণ, ১৯ নভেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার ১৪৩ বার পঠিত
রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী নগরীর মতিহার থানার নানা অপকর্ম ও রমরমা ঘুষ বানিজ্য ও মিথ্যা মামলার অভিযোগ উঠেছে। এই মিথ্যা মামলার বড় কান্ডারি হচ্ছে মতিহার থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) সাহাবুল। যার মিথ্যা মামলার ফাঁদে অতিষ্ঠ্য ঐ এলাকার সাধারণ মানুষ। তবে এর সাথে থানার অফিসার ইনচার্জ সিদ্দিকুর রহমানের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অনুসন্ধানে জানাযায়, রাজশাহী মেট্রোপলিটন এলাকার অন্যতম থানা হচ্ছে মতিহার। এই থানার কোল ঘেঁসে বয়ে চলেছে বহমান পদ্মা নদী অর্থাৎ বাংলাদেশ বর্ডার এলাকা। এই পদ্মার পাড় ঘেঁসে গড়ে উঠেছে পাড়া মহল্লা। এই পাড়া মহল্লা শুধু পাড়ায় নয় এটা যেন মাদকের কারখানা। এই এলাকার বেশির ভাগ মানুষ মাদকের সাথে জড়িত। মতিহার থানা এলাকার নদীর ধারের চরশ্যামপুর, মিজানের মোড়, ডাশমারি মোড়, জাহাজঘাট মোড়, ফুলতলা এলাকার আশি শতাংশ মানুষ মাদকের সাথে জড়িত রয়েছে। এই মাদকের সূত্র ধরে দীর্ঘদিন থেকে নানা অপকর্ম করে চলেছে এসআই সাহাবুল। এই এসআই সাহাবুলের মিথ্যা মামলার রোসানলে সর্বশান্ত হয়েছে ঐ এলাকার অনেক পরিবার যা খোঁজ নিলে পাওয়া যাবে। দীর্ঘদিন এই মতিহার থানায় থাকার সুবাদে থানার সকল কিছুই যেন তার হাতের মুঠোই। কোথায় কে আছে কাকে ম্যানেজ করতে হবে সব কিছুই তার ঘটির জলের মত। কিন্তু মতিহার থানার বর্তমান ওসি সিদ্দকুর রহমান চলতি বছরের জুলাই মাসে থানায় যোগদানের পর জানতে পারেন এসআই সাহাবুলের তেলেসমাতির কথা। ওসি আরও জানতে পারেন এই তেলেসমাতির বাখরাবাজ এসআই সাহাবুল নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় বদলি হয়ে গেছেন। এরপর ওসি সিদ্দিকুর রহমান যে কোন মুল্যে এই মামলার জাদুকর এসআই সাহাবুলকে এই থানাতে রাখতে হবে বলে মনস্থির করেন । যেমন চিন্তা ঠিক তেমনি কাজ। পুলিশ কমিশনারের নিকট মৌখিক আবেদন জানান এসআই সাহাবুলকে মতিহার থানায় রাখার জন্য। ওসি’র এমন আবদার মেনে নেন নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনার মহোদয়। উল্লেখ্য যে এই আলোচিত এসআই এখন পর্যন্ত বড় কোন উদ্ধার দেখাতে পারেনি। অথচ মাত্র কয়েকদিন আগেই মতিহার থানার পাশ থেকে র্যাব অভিযান চালিয়ে ৬০০০+ পিছ ইয়াবা ও হিরোইন উদ্ধার করেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে র্যাব পারলে থানা পারেনা কেন? কারন এই এলাকার যত মাদক ব্যাবসায়ী আছে সকলেই মাশোহারা দেই। তাই ঐ সকল এলাকাতে পুলিশ বড় কোন অভিযান চালাই না। তাই সব মিলিয়ে রমরমা দিন গুনেন এস আই সাহাবুল। এছাড়াও দীর্ঘদিন আরএমপিতে থাকার সুবাদে নগরীর ডিঙ্গাডোবা এলাকায় গড়ে তোলে বিলাশ বহুল বাড়ি। তার বিষয়ে কেউ মুখ খুললে তিনি তাকে বিপদে ফেলার চেষ্টায় মেতে থাকেন। শুধু তাই নয় তিনি মিজানের মোড় ও জাহাজঘাট এলাকায় কয়েকটি মেয়ের সাথেও অনৈতিক সম্পর্কও গড়ে তোলেন যার মোবাইলের ভয়েজ রেকর্ড মিডিয়া কর্মীদের হাতে রয়েছে। তার এমন অপকর্মের জন্য প্রায় তিন মাস আগেই মতিহার থানা থেকে বদলি করে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় দেওয়া হয়। কিন্তু বর্তমান ওসিকে সুবিধা দেওয়ার কারনে ওসির সুপারিশে তাকে সে থানায় রেখে দেওয়া হয়।
তবে বর্তমান নবনিযুক্ত পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক যোগদানের পর সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় উল্লেখ করেন আপনাদের কোন কিছু জানার থাকলে আপনারা মিডিয়া মুখ্যপাত্রের নিকট থেকে জানবেন। এরপর থেকে সকল থানার কার্যক্রম যেন আরও বেগবান হয়েছে। এরপর থেকে সাংবাদিকরা থানায় কোন তথ্য জানতে চাইলে থানা কর্তৃপক্ষ বলেন, আপনারা মিডিয়া মুখ্যপাত্র স্যারের নিকট থেকে জেনে নিবেন। এবষিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ছে সাংবাদিকরা। উদাহরন হিসেবে সদ্য ঘটে যাওয়া কয়েকটি ঘটনা তুলে ধরা হলোঃ ১০ নভেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার শেষ রাতের দিকে নগরীর মিজানের মোড় এলাকা থেকে মিঠু নামের এক মাদক ব্যাবসায়ীকে ১০ বোতল ফেন্সিডিলসহ আটক করে এসআই সাহাবুল। এরপর বিশেষ সুবিধা নিয়ে ৫ বোতলের মামলা দেয় এসআই সাহাবুল। ১০ নভেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে তালাইমারি মোড়ে এসআই মামুনের মোটর সাইকেলের সাথে আরেক মোটর সাইকেল একসিডেন্ট করে। পরে তাদের উদ্ধার করে তাদের নাম ঠিকানা ও তথ্য নেওয়া হয়। জানা যায় নগরীর মেহেরচন্ডি এলাকার বাচ্চু বাবুর্চির ছেলে সিয়াম ও বালিয়াপুকুর ছোট বটতলার বাচ্চু ড্রাইভারের ছেলে বিপ্লব মারামারির উদ্দেশ্যে বড় চাকু সম্বলিত লোহার পাতি নিয়ে যাচ্ছিলো । পথিমধ্যে তালাইমারি মোড়ে মোটর সাইকেল একসিডেন্ট করে। পরে সাংবাদিকরা আসামীদের ছবি নিতে চাইলে আসামীদের ছবি নেওয়া যাবেনা বলে জানান থানার অফিসার ইনচার্জ সিদ্দিকুর রহমান। পরে রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে মোটা অংকের সুবিধা নিয়ে ছেড়ে দেন থানার অফিসার ইনচার্জ সিদ্দিকুর রহমান। এরপর সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের কয়ফিয়ত দিয়ে কি আমাকে ওসি গিরি করা লাগবে? আপনাদের কিছু জানার থাকলে আপনারা মিডিয়া মুখ্যপাত্রের থেকে জেনে নিবেন। তবে ওসির এমন উত্তরে খোদ সাংবাদিক মহল ফুসে উঠেছে। ওসির এমন উত্তরের জবাবে রাজশাহী মডেল প্রেসক্লাবের সাংবাদিক বৃন্দরা তিব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সাংবাদিকরা আরও বলেন, পুলিশ হচ্ছে আইনের রক্ষক তারাই যদি এমন কর্মকান্ড করে তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?তবে মতিহার থানার এই ওসি এসআই সাহাবুলের বিষয়ে সেরকম কিছু জানেন না বলে জানান।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক সত্যের সন্ধান'কে জানাতে ই-মেইল করুন- sattersandhan24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
দৈনিক সত্যের সন্ধান'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।